এফএনএস স্পোর্টস: দলের প্রয়োজন চার, পারভেজ হোসেন ইমনের দরকার তখন চার। দুর্দান্ত কাভার ড্রাইভে বাউন্ডারিতে দুটিই হয়ে গেল একসঙ্গে। বাঁধনহারা উচ্ছ্বাসে মাতলেন পারভেজ। রান তাড়ার অসাধারণ এক উপাখ্যান রচিত হলো শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে। নাজমুল হোসেন শান্তর বিধ্বংসী সেঞ্চুরিতে যে রান পাহাড় গড়েছিল রাজশাহী, পারভেজের রেকর্ড গড়া দ্রুততম সেঞ্চুরিতে তা টপকে গেল বরিশাল। রান খরার বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে মঙ্গলবার হঠাৎই এলো রানের জোয়ার। পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থাকা দুই দলের লড়াইয়েই হয়ে গেল রান তাড়ার রেকর্ড। মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহীর ২২০ রান টপকে ফরচুন গ্রুপ বরিশাল জিতে গেল ৮ উইকেট। বাংলাদেশে টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি রান তাড়ার রেকর্ড এটিই। এই দুঃসাধ্য কাজটি বরিশাল করেছে ১১ বল বাকি রেখেই। গত জানুয়ারিতে বঙ্গবন্ধু বিপিএলে ঢাকা প্লাটুনের ২০৫ রান তাড়ায় খুলনা টাইগার্সের জয় ছিল বাংলাদেশে রান তাড়ার আগের রেকর্ড। খুলনাও জিতেছিল ৮ উইকেটে, ঠিক ১১ বল বাকি রেখেই। রেকর্ড ছোঁয়া ১১ ছক্কায় রাজশাহীর হয়ে শান্ত খেলেন ৫৫ বলে ১০৯ রানের ইনিংস। জবাব হয়ে আসে পারভেজের ইনিংস। গত অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য এই ব্যাটসম্যান খেলেন ৪২ বলে ১০০ রানের অপরাজিত ইনিংস। বেশ অনেকটা ব্যবধানে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যানের দ্রুততম সেঞ্চুরি এটিই। ২০১৯ বিপিএলে গড়া তামিম ইকবালের ৫০ বলে সেঞ্চুরির রেকর্ড এখন অতীত। রানের রেকর্ডময় এই ম্যাচেও হ্যাটট্রিকের স্বাদ পেয়েছেন বরিশালের কামরুল ইসলাম রাব্বির। প্রথম ইনিংসের শেষ ওভারে হ্যাটট্রিকসহ উইকেট নেন তিনি চারটি। বরাবরই মন্থর মিরপুরের উইকেট এ দিন দেখা গেল অনেক ব্যতিক্রম। উইকেটে ছিল ঘাসের ছোঁয়া, বল ব্যাটে এলো দারুণভাবে। দুই দলের ব্যাটসম্যানরা সেটি কাজে লাগালেন। সঙ্গে দুই দলেরই বোলিং ছিল বেশ বাজে। রান উৎসবের শুরু রাজশাহীর আনিসুল ইসলাম ইমনের ব্যাটে। টস হেরে ব্যাটে নামা দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন এই ওপেনার। তিনি যখন বেধড়ক পেটাচ্ছেন, শান্ত তখনও দর্শক। ষষ্ঠ ওভারে ইমনের রান ২০ বলে ৪৫, শান্তর রান তখন ১২ বলে ৭। কামরুলের ওই ওভারে টানা দুই বলে ছক্কা ও চার মেরে ছুটতে শুরু করেন শান্ত। এরপর আর থামাথামির নাম নেই। ইমন-শান্তর উদ্বোধনী জুটিতে ১২.২ ওভারে আসে ১৩১ রান। অনায়াসেই যা টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ জুটি। ৩৯ বলে ৬৯ রান করা ইমনকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন সুমন খান। তবে শান্তর ঝড় চলতেই থাকে। ৩২ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করেন তিনি, তিন অঙ্কে পা রাখেন ৫২ বলে। ৪ চার ও ১১ ছক্কায় ১০৯ করে আউট হন ইনিংসের শেষ ওভারে।