বাসস : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, স্বল্প মূল্যে পণ্য ও জন পরিবহন নিশ্চিত করতে সারাদেশে শক্তিশালী যোগাযোগ নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠার অংশ হিসেবে সরকার দেশব্যাপী রেল যোগাযোগ আরও সম্প্রসারিত করার উদ্যোগ নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রেলকে আরো শক্তিশালী করার আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে। সারাদেশে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের জন্য রেলনেটওয়ার্ক আমরা সৃষ্টি করবো। যাতে অল্প খরচে পণ্য পরিবহন এবং মানুষের যাতায়াতের অনেক সুবিধা হয়।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যমুনা নদীর ওপরে বঙ্গবন্ধু সেতুর উজানে ১৬ হাজার ৭৮১ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পৃথক ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু’র ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপনকালে একথা বলেন।
তিনি আজ সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিমপাড় সিরাজগঞ্জের সয়দাবাদে আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সারা বাংলাদেশে আমরা রেলের নেটওয়ার্ক তৈরী করতে চাচ্ছি। একেবারে ঢাকা থেকে বরিশাল, পটুয়াখালী হয়ে পায়রা বন্দর পর্যন্ত রেললাইন নিয়ে যাব। তার সমীক্ষা শুরুর ব্যাপারে আমরা উদ্যোগ নিয়েছি। ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, সেখান থেকে কক্সবাজার ও টেকনাফ পর্যন্ত যাবে রেললাইন।’ তিনি বলেন, ‘রেলপথ, সড়ক পথ, আকাশ পথ এইসবগুলোর উন্নয়নেই আমরা ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। তাতে আমাদের দেশের অর্থনীতি আরো শক্তিশালী হবে ও মজবুত হবে।’ ‘তাছাড়া ট্রান্সএশিয়ান রেলওয়ের সঙ্গে যখন আমরা সংযুক্ত হয়ে যাব, এটাও আমাদের জন্য বিরাট কাজ হবে,’ যোগ করেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বলেছিলেন বাংলাদেশ হবে প্রাচ্যের সুইজারল্যান্ড। অর্থাৎ বাংলাদেশ হবে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে একটা সেতুবন্ধন। আর সেই সেতুবন্ধন করতে গেলে আমাদের ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ের সঙ্গে সংযোগ করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিস্তা নদীর ওপর যে রেল সেতু সেখানে গাড়ি চলার কোন সেতু ছিল না। তিনি সরকারে আসার পর সেখানে পৃথক সড়ক সেতু করে দেন। নইলে আগে রেলসেতুর ওপর দিয়েই ঝুঁকিপূর্ণভাবে গাড়ি পারাপার চলতো।
তিনি বলেন, ভৈরবে রেল লাইনের ওপর দিয়েই অপেক্ষমান থেকে একটা করে গাড়ি পার হোত। সেখানেও পৃথক সড়ক সেতু করেছেন। কালুরঘাটেও রেল সেতুর পাশাপাশি পৃথক সড়ক সেতু হয়েছে। সরকার প্রধান বলেন, ‘এভাবে সারা বাংলাদেশে রেল যোগাযোগকে উন্নত করা, আধুনিক করা এবং বহুমুখী করার, যাতে মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রাখতে পারে। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা করে যাচ্ছি।’ শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়নে সকলকে আন্তরিকতার সঙ্গে স্ব-স্ব দায়িত্ব পালনের পাশপাশি করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পাবার জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়টিও স্মরণ করিয়ে দেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব সেলিম রেজা স্বাগত বক্তৃতা করেন।