নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট রাজশাহী অঞ্চলের উদ্যোগে “রাজশাহী অঞ্চলে বোরো ধানের ফলন বৃদ্ধিতে করণীয়’’ শীর্ষক এক আঞ্চলিক কর্মশালার অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার সকালে মহানগরীর বিসিএসআইআর মিলনায়তনে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এর মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীরের সভাপতিত্ত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কমলারঞ্জন দাশ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপ¯িহত ছিলেন বিসিএসআইআর এর পরিচালক ড. মো. ইব্রাহিম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, রাজশাহী অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মো. সিরাজুল ইসলাম ও রাজশাহী অঞ্চলের আঞ্চলিক বীজ প্রত্যয়ন অফিসার কৃষিবিদ মো. হাবিবুল হক।
কর্মশালায় মুল প্রবন্ধ উপ¯হাপন করেন ব্রি আঞ্চলিক কার্যালয় রাজশাহীর প্রধান এবং প্রিন্সিপাল সাইন্টিফিক অফিসার ড. মো. ফজলুল ইসলাম। এছাড়াও ডিএই, রাজশাহী অঞ্চলের পক্ষ থেকে প্রবন্ধ উপ¯হাপন করেন অতিরিক্ত পরিচালকের কার্যালয় রাজশাহীর উপপরিচালক মো. খয়ের উদ্দিন মোল্লা । কর্মশালায় কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তর, রাজশাহী অঞ্চলের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা, বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান, বিএডিসি, বিএমডিএ, বীজ প্রত্যয়ণ এজেন্সী ও বিভিন্ন এনজিও এবং কৃষক প্রতিনিধিসহ ১৫০ জন অংশগ্রহণ করেন। কর্মশালায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ ¯হানীয়-ভাবে চাষাবাদকৃত জিরা ধানের রোগ ও পোকা মাকড়ের আক্রমণসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়ায় দ্রুত উক্ত জাতের বিকল্প উচ্চ ফলনশীল ধানের জাত আবিষ্কারের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এছাড়াও তারা বোরো মওসুমে ব্রি ধান২৮ ও জিরা ধানে ব্লাস্ট রোগের আক্রমন বেশী হওয়ায় এর বিকল্প জাত উন্নয়ন বিশেষ করে ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী জাত দেয়ার জন্য পরামর্শ প্রদান করেন। কর্মশালায় প্রধান অতিথি ড. মো. শাহজাহান কবীর বলেন জিরা ধানের পরিবর্তে ব্রি কর্তৃক নতুন উদ্ভাবিত জাত বিশেষ করে ব্রি ধান৫৮, ব্রি ধান৬৩, ব্রি ধান৮১, ব্রি ধান৮৪, ব্রি ধান ৮৬, ব্রি ধান৮৮, ব্রি ধান৮৯ এবং ব্রি ধান৯২ দ্রুত কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারলে ধানের ফলন বৃদ্ধি পাবে যা খাদ্য নিরাপত্তায় গুরুত্ত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে। তিনি বলেন রাজশাহী অঞ্চল খরা প্রবণ এলাকা হওয়ায় পানিসেচের জন্য উৎপাদন খরচ বেশী হওয়া সত্ত্বেও এ অঞ্চলে বোরো ধানের আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কর্মশালায় ব্রি’র মহাপরিচালক বলেন দেশে এখন প্রায় ৫০ লক্ষ হে. জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয় এবং সরকারের নানামমূখী উদ্যোগের কারনে নানা প্রতিকুলতা সত্ত্বেও গত ২০১৯-২০ মওসুমে বোরো ধানের উৎপাদন প্রায় ২ কোটি মেট্ট্রিক টনে দ্বাড়ায়। এর পেছনে গুরুত্ত¦পূর্ণ ভ’মিকা রেখেছে নতুন উদ্ভাবিত ধানের জাত, জাতসমূহের সম্প্রসারণ, আধুনিক ব্যব¯হাপনা ও সরকারের সঠিক নীতি। এছাড়াও ব্রি’র মাননীয় মহাপরিচালক আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি, উন্নত ফসল ব্যব¯হাপনা বিশেষ করে সময়মত বীজতলা তৈরী, চারা লাগানো, সার ব্যব¯হাপনা এবং রোগ ও পোকা দমনের কার্যকরী উপায়সহ আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের উপর গুরুত্ত্ব আরোপ করেন। তিনি মুজিব বর্ষ উপলক্ষ্যে রাজশাহী অঞ্চলে ব্রি কর্তৃক উদ্ভাবিত আধুনিক জাতসমূহ দ্রুত বিস্তারের লক্ষে প্রয়োজনীয় বীজ বিশেষ করে ব্রি ধান ৮১ এর বীজ কৃষকদের বিনামূল্যে দেয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। কর্মশালায় কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম অতি দ্রুত বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধী জাত বিশেষ করে ধানের ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী জাত অবমুক্ত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।